সেহেরির যে ১৫টি অভ্যাস আপনাকে রোজাতে সতেজ রাখবে দিনভর

রমজান মাসে সেহেরির সময় গ্রহণ করা খাবার ও পানীয় রোজাদারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেহেরির খাবারই পুরো দিনের শক্তি ও সতেজতা প্রদান করে। সঠিক অভ্যাস এবং পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে আপনি রোজা রাখার সময় আপনার শক্তি ধরে রাখতে পারেন এবং সারাদিন সতেজ অনুভব করতে পারবেন। এখানে ১৫টি সেহেরির অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, যা আপনাকে রোজাতে সতেজ রাখবে।

সেহেরিতে সঠিক পুষ্টির খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। লাল চালের ভাত, ডাল, শাকসবজি, ডিম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে দীর্ঘ সময় শক্তি পাওয়া যায়। এই ধরনের খাবার দ্রুত হজম হয় না, ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে।

সেহেরিতে ২-৩ গ্লাস পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং পানির ঘাটতি পূরণ করে। পুরো রোজা রাখার সময় ডিহাইড্রেশন এড়িয়ে চলতে এই অভ্যাস অত্যন্ত কার্যকর।

মধু বা ঝোলা গুড় খেলে প্রাকৃতিক চিনি সরবরাহ হয়, যা শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি হজমেও সহায়ক এবং শরীরকে দ্রুত পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত রাখে।

অতিরিক্ত ঝাল বা মশলা খাবার পিপাসা বাড়াতে পারে এবং হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই সেহেরিতে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন, যা শরীরে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।

সেহেরিতে স্লো-ডাইজেস্টিং খাবার যেমন ওটস, আটার রুটি বা লাল চালের ভাত খেলে পুরো দিনের জন্য শক্তি পাবেন। এই খাবারগুলো ধীরে ধীরে হজম হয়, ফলে পেট ভরা থাকে এবং ক্লান্তি কম হয়।

দই বা দুধ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং হজম সহজ হয়। এটি পুষ্টির পাশাপাশি শরীরের শক্তিও জোগায়, যা রোজার সময়ে খুবই প্রয়োজনীয়।

কলা, খেজুর, আপেল, শসা বা তরমুজের মতো ফল সেহেরিতে খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং সহজে শক্তি পায়। ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও জলীয় উপাদান পায়।

চা বা কফিতে ক্যাফেইন থাকে, যা ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। সেহেরির সময় চা বা কফি পরিহার করলে ভালো, তবে আপনি চাইলে হালকা গ্রিন টি বা হার্বাল চা পান করতে পারেন।

সেহেরি খাওয়ার পর ২০-৩০ মিনিট হাঁটলে হজমে সহায়ক হয় এবং সারাদিন সতেজ অনুভব করবেন। তবে ভারী ব্যায়াম থেকে বিরত থাকুন, কারণ তা শরীরকে ক্লান্ত করতে পারে।

ভারি খাবার খেলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেহেরিতে হালকা খাবার যেমন হাতে ভাজা মুড়ি, দই, টোস্ট, অথবা হালকা স্যুপ খেতে পারেন, যা হজমে সহায়তা করবে।

খাবার খাওয়ার পর ২০-৩০ মিনিট বিশ্রাম নিন। এটি শরীরকে শক্তি দেয় এবং শরীরের হজম প্রক্রিয়া সুগম করে। তবে ঘুমিয়ে পড়বেন না, কারণ এতে রোজার জন্য প্রস্তুতি কমে যেতে পারে।

বাদাম, কাঠবাদাম, কাজু, পেস্তা বা খেজুর সেহেরিতে খাবার অংশ হিসেবে খেলে শরীরের শক্তি বজায় থাকে এবং এটি হজমে সাহায্য করে।

গ্রিন টি বা হার্বাল চা পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং এটি পিপাসা কমায়। এটি শরীরের ক্ষতিকর টক্সিনও বের করে দেয়, ফলে আপনি চনমনে অনুভব করবেন।

মিষ্টি খাবারের মধ্যে মধু, ঝোলা গুড় বা চিনি কম দেওয়ার খাবার খেতে পারেন, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি প্রদান করে। তবে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি দ্রুত তৃষ্ণা তৈরি করতে পারে।

খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেলে হজম ভালো হয় এবং শরীর দ্রুত শক্তি পায়। একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়ার থেকে পরিমিত খাবার খান, যাতে ক্লান্তি না হয়।


রোজা রাখার সময় শরীরকে সতেজ রাখা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে সঠিক অভ্যাস ও পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে আপনি সারাদিন সতেজ ও শক্তিশালী থাকতে পারবেন। এই ১৫টি সেহেরি অভ্যাস আপনাকে রোজার পুরো মাসে সতেজ রাখবে এবং আপনাকে আরও ভালোভাবে ইবাদত করতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, রোজা শুধু খাদ্য ও পানীয়ের নিয়ন্ত্রণ নয়, এটি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যও উন্নত করে। তাই সেহেরি সময়ের অভ্যাসগুলো গ্রহণ করে আপনি প্রতিটি দিনকে আরও সফল এবং পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করতে পারবেন।

দেশজের অথেনটিক সব প্রোডাক্ট পেতে এখনই ভিজিট করুন ঃ

Share the Post:
My Cart
Wishlist
Recently Viewed
Compare Products (0 Products)
Compare Product
Compare Product
Compare Product
Compare Product
Categories